ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে — ডেপুটি স্পিকার

বাংলার সকাল ডেস্কবাংলার সকাল ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৭:৪৯ PM, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

তথ্যবিবরণী :বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোঃ শামসুল হক টুকু এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তিনি নিজে দুইবার ফাঁসির মুখোমুখি হয়েও নিজেদের অধিকার আদায়ে পরাজিত শাসকগোষ্ঠীর কাছে নতি স্বীকার করেননি। তাই আমাদের ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের স্বাধীনতা সোপান চত্বরে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আবৃত্তি সংসদ এর উদ্যোগে আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এর উদ্বোধনী অন্ষ্ঠুানেপ্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, এই ভাষার মাসেই আগরতলা মামলায় শাসক গোষ্ঠীর প্রহসনের বিচারের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল, তখন ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ঘটে। ১৫ই ফেব্রুয়ারিতে কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হলে সেই গুলি সার্জেন্ট জহুরুল হকের বুকে লাগলে তিনি নিহত হন। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, ছাত্র-জনতা রাস্তায় বেরিয়ে আসে এবং ‘সার্জেন্ট জহুরুল হকের হত্যার বদলা নেবো, শেখ মুজিবকে মুক্ত করবো’ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত আন্দোলন তীব্রথেকে তীব্রতর হয়।
মোঃ শামসুল হক টুকু বলেন, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের রক্তের ধারাবাহিকতায় বাংলার ছাত্র, যুবক, কৃষক,শ্রমিক, পেশাজীবী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ফুঁসে উঠেছিল। এই হত্যার বিচার ও শেখ মুজিবের মুক্তির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলাম। সেখানে গুলি ও লাঠিচার্জে আহত ছাত্রের গায়ের রক্ত ড. শামসুজ্জোহার শার্টে লাগে। তিনি সেদিন একটি সভায় শার্ট খুলে দেখিয়ে বলেছিলেন, আর যদি আমার ছাত্রের গায়ে গুলি করা হয় তাহলে সে গুলি আমার ছাত্রের গায়ে না লেগে আমার গায়ে লাগবে।
তিনি আরও যোগ করেন, আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শাসকগোষ্ঠীর আধা সামরিক বাহিনীর উপর্যুপরি গুলি ও বেয়োনেটের আঘাতে ড. শামসুজ্জোহা শহিদ হন। ড. জোহার রক্তের বদলায় জনতার রোষানলে পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আগরতলা মামলার সকল আসামীকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২২ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতেশেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় ।
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ আলপনা ইয়াসমিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোঃ শাহ আযম, সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ হাসান আলী খানসহ গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেড়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোঃ শামসুল হক টুকু এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু এই ফেব্রুয়ারি মাসেই ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগ্রত করার মধ্য দিয়ে মাতৃভাষা রক্ষার যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা পূর্ণতা পায় জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়া, ৭ই মার্চের ভাষণ দান, স্বাধীনতা ঘোষণা প্রদান, নিজেদের মানচিত্র ও লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত ভাষা ও স্বাধীন দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।
অনুষ্ঠানে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোরশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, কর্মকর্তাবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মতামত লিখুন :