‘রাজশাহীকে কর্মমুখর ও আরো নান্দনিক শহরে পরিণত অপেক্ষায়’: মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন

বাংলার সকাল ডেস্কবাংলার সকাল ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৮:১৯ PM, ০৪ মে ২০২৩

 

ষ্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীকে কর্মমুখর ও আরো নান্দনিক শহরে পরিণত করার অপেক্ষায় আছি বলে জানিয়েছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বৃহস্পতিবার নগর ভবনের সিটি হল সভাকক্ষে দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান পরিষদের ১৩তম সাধারণ সভায় এ কথা জানান রাসিক মেয়র।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী নগরীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ অবকাঠামো উন্নয়ন দৃশ্যমান। আলোকায়নের কাজ চলছে। সেটি আরো সুচারুভাবে করতে হবে। পরিবেশের ক্ষেত্রে যে সুমান অর্জন করেছি, আরো বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সেটি বাড়াতে হবে। আমরা যেটুকু কাজ করতে পেরেছি, তা ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। দেশের মানুষ এখন জানে রাজশাহী সারাদেশের মধ্যে সেরা সুন্দর ও বসবাসযোগ্য শহর। রাজশাহীর সুনাম দেশের সীমানা পার হয়ে দেশের বাইরের দেশেও পৌছে গেছে। এই কৃতিত্ব আমাদের সবার।

শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের যৌথ ব্যবসার মাধ্যমে রাজশাহীকে সমৃদ্ধ করার একটি বড় সুযোগ আছে। সেই সুযোগটিকে কাজে লাগাতো চাই। সেক্ষেত্রে পদ্মা নদীর নব্যতা ফিরিয়ে এনে ভারতের মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান থেকে রাজশাহী পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে ঢাকা পর্যন্ত নৌরুট চালু করে বিভিন্ন মালামাল আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে রাজশাহীকে আরো উন্নত করতে চাই। রাজশাহী থেকে কলকাতা সরকারি ট্রেন ও বাস যোগাযোগ চালু করতে চাই। বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণে টেন্ডার হয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন হবে। এখন শিল্পায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। শিল্পায়ন করতে ইতোমধ্যে রাজশাহী বিসিক শিল্পনগরী-২ এর কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হবে। সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কলকারখানা হবে। রাজশাহী সিটি আয়তন বাড়ানো হবে। রাজশাহীকে অর্থনৈতিকভাবে উপরে তুলে আনতে এই কাজগুলো করতে হবে। সবকিছু মিলিয়ে রাজশাহীকে কর্মমুখর ও আরো নান্দনিক শহরে পরিণত করার অপেক্ষায় থাকলাম।

রাসিক মেয়র আরো বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও সহযোগিতায় এবং আমাদের নিজেদের উদ্যোগে রাজশাহীবাসীর সহযোগিতায় সিটি কর্পোরেশনের অর্থ থেকে দফায় দফায় খাদ্য, নগদ অর্থ, বিনামূল্যে ওষুধ, অক্সিজেনা মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌছে দিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে করোনা ভ্যাক্সিন নাগরিকদের প্রদান করেছেন। সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাক্সিন প্রদানে এখন পর্যন্ত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় বছর আমরা কোন কাজ করতে পারিনি। তখন অন্য কাজ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র করোনা মোকাবেলা ও মানুষকে রক্ষা কাজ করতে হয়েছে। করোনার দুঃসময়ে অনেক সন্তানেরা বাবা-মায়ের লাশ ফেলে পালিয়ে গিয়েছিল। সে সময় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে লাশ করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছি।

সভামঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রাসিকের মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, প্যানেল মেয়র-২ ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, প্যানেল মেয়র-৩ ও ১নং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর তাহেরা খাতুন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন ও সচিব মশিউর রহমান।

সভায় ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন, ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূরুজ্জামান, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এসএম মাহবুবুল হক পাভেল, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাসেল জামান, ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম তজু, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সোবহান, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল আহম্মেদ, ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহু, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন, ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিযাম উল আযীম, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলী, ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতারুজ্জামান কোয়েল, ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ারুল আমিন আযব, ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, আশরাফুল হাসান (বাচ্চু), ২৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুদ রানা, ৩০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম পিন্টু, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর আয়েশা খাতুন, মুসলিমা বেগম বেলী, শিরিন আরা খাতুন, মাজেদা বেগম, উম্মে সালমা, নাদিরা বেগম, আয়েশা খাতুন মুক্তি, সুলতানা রাজিয়া, প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার, প্রধান রাজস্ব কমর্কর্তা আবু সালেহ মোঃ নূর-ঈ সাঈদ, বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোঃ মামুন সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় রাসিকের অর্থ ও সংস্থাপন স্থায়ী কমিটির ৪টি প্রস্তাব, হিসাব নিরীক্ষা ও রক্ষণ স্থায়ী কমিটির ২টি, যোগাযোগ স্থায়ী কমিটির ২টি, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংক্ষরণ স্থায়ী কমিটির ৫টি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির ২টি, পরিবেশ উন্নয়ন স্থায়ী কমিটির ৯টি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থা স্থায়ী কমিটির ৫টি, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন স্থায়ী কমিটির ৬টি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ২টি, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির ১টি, দোকান বরাদ্দ কমিটির ৪টি, ইজিবাইক, অটোরিক্সা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ কমিটির ৪টি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এছাড়া রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপিতে বর্ণিত অবকাঠামোসমূহের (শেখ রাসেল শিশু পার্ক, শেখ কামাল কনভেনশন হল এবং বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি) নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট হতে অনুমোদন গ্রহণ, কিশোর ফুটবল একাডেমিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, দারিদ্রতা বিমোচনের লক্ষ্যে সিডিসি কর্তৃক তহবিল গঠন প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভার শুরুতে গত ১২তম সাধারণ সভা হতে ১৩তম সাধারণ সভা পর্যন্ত দেশ-বিদেশের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গণ্যমান্য ব্যক্তি, সমাজসেবক ও কর্পোরেশনের যে সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের বিষয়ে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতাসহ সকল শহীদ ও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, রাসিক এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গণ্যমান্য ব্যক্তি, সমাজসেবক ও কর্পোরেশনের যে সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন সোনাদিঘী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ক্বারী মোঃ মামুন উর রশীদ।

আপনার মতামত লিখুন :