জাতিসংঘে ইউক্রেন ইস্যুতে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ

বাংলার সকাল ডেস্কবাংলার সকাল ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:৫৫ PM, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের একবছর পূর্তি উপলক্ষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বিশেষ বৈঠক বসেছে। দুই দিন সভা চলার পর মার্কিন সময়ে বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রয়ারি) রাতে বিশেষ ভোটাভুটি হয় সাধারণ সভায়। এতে সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। তবে ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানসহ ৩২টি দেশ ভোটে অংশ নেয়নি বলে জানিয়েছে ডয়চে ভেলে।

জাতিসংঘে এ ভোটের প্রস্তাব এনেছিল জার্মানি। প্রস্তাবে বলা হয়, জাতিসংঘের চার্টার মেনে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। ১৪১ টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় আর সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়।

গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে প্রথম আক্রমণ চালিয়েছিল রাশিয়া। তার ঠিক এক বছর পর জাতিসংঘে এই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হলো।

এর আগেও একাধিকবার ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ভোটাভুটি হয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবারেই যে ফলাফল পাওয়া যায়, এবারও প্রায় তেমনই ফলাফল মিলেছে। ইউরোপ এবং আমেরিকার অধিকাংশ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। প্রস্তাবের বিপক্ষে থেকেছে রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, মালি, এরিত্রিয়া এবং নিকারাগুয়া। যে ৩২টি দেশ ভোটে অংশ নেয়নি, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভারত, পাকিস্তান, চীন, সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ। মধ্য এশিয়ার বেশ কিছু দেশও ভোটে অংশ নেয়নি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রাশিয়া। তারপর থেকে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় শান্তিপ্রস্তাব নিয়ে একাধিক ভোট হয়েছে। একবার ছাড়া প্রতিটি ভোটেই বিরত থেকেছে ভারত। বস্তুত, এবার যাতে ভারত ভোট দেয়, তার জন্য বিভিন্ন মহলে কূটনৈতিক আলোচনা হয়েছে। ভারতে এসেছেন মার্কিন কূটনীতিক এবং রাজনীতিবিদেরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান ভারত সফর করেছেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক কিছুদিন আগেই ভারত সফর করে গেছেন।

এদিন ভোটাভুটির আগে ডয়চে ভেলের প্রতিনিধি ইনেস পোলকে তিনি জানিয়েছিলেন, ভারত যাতে ভোট দেয়, তার জন্য সবরকম চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত ভারত তার আগের অবস্থানেই অনড় থাকল।

এদিকে চলতি সপ্তাহেই ভারত সফরে আসার কথা জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎসের। তার সফরে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কী কথা হয়, সেদিকেই তাকিয়ে কূটনীতিকেরা। অন্যদিকে ভারতের এবারের অবস্থানের পর পশ্চিমা দেশগুলি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা-ও গুরুত্বপূর্ণ।

এদিন জাতিসংঘের ভোট নিয়ে কূটনীতিকদের বক্তব্য, যা আশা করা গেছিল, তা-ই ঘটেছে। বিরাট কোনো পরিবর্তন হয়নি। সাউথ সুদানের মতো কিছু দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু বড় কোনো দেশ সেই অর্থে অবস্থান পরিবর্তন করেনি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস হয়। ওই প্রস্তাবেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ। নভেম্বরের ওই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য এবং ইউক্রেনে আক্রমণের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রত্যাবাসন ও প্রতিকার ব্যবস্থা তৈরির জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানানো হয়। তবে তার আগের মাস অক্টোবরে জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল বাংলাদেশ।

আপনার মতামত লিখুন :