ছয় মাসেও উদঘাটন হয়নি পল্লী চিকিৎসক মান্নান হত্যা মামলার রহস্য!

বাংলার সকাল ডেস্কবাংলার সকাল ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৩:৫৮ PM, ০৫ নভেম্বর ২০২২

স্টাফ রিপোর্টারঃ দীর্ঘ ছয় মাসেও উদঘাটন হয়নি চারঘাটের পল্লী চিকিৎসক মান্নান হত্যা মামলার রহস্য! মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে দেওয়া হলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন- ভুক্তভোগী পরিবার। এই হত্যা মামলার অগ্রগতি, সব আসামি গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে রাজশাহীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে শনিবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

নিহতের পরিবার ও রাজশাহীর চারঘাটের স্থানীয় অধিবাসীদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে স্থানীয়রা বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধন চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নিহতের ছেলে মাহিম হোসেন লিমন অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তার বাবা আবদুল মান্নান (৭০) একজন পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। গত ২২ এপ্রিল পবিত্র রমজান মাসে ইফতারের সময় ফসলি জমিতে বিষ প্রযোগ করতে যান তার বাবা। এ সময় কে বা কারা নৃশংশভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে তার বাবাকে। এই খুনের ঘটনায় চারঘাট মডেল থানায় উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে রবিউল ইসলামসহ অজ্ঞাত আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে ২৩ এপ্রিল মামলা করা হয়।

কিন্তু অগ্রগতি না থাকায় এবং অমনোযোগী হওয়ায় আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এই মামলাটি তৎকালীন সময়ে চারঘাট মডেল থানা থেকে গত ৭ জুলাই পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন। কিন্তু পিবিআই সেই মামলাটি পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সরজমিনে মাত্র দুই থেকে তিনবার ঘটনাস্থলে গেছে।

আর পিবিআইতে মামালা যাওয়া প্রায় সাড়ে চার মাস হলেও আজও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই হত্যার রহস্য খুঁজে পায়নি। আমরা সন্তান হিসেবে আজ অসহায়। বাবা হারিয়ে আমরা এতিম হয়েছি। বিধবা হয়েছেন আমার গর্ভধারিণী মা। বাবা হত্যার পর মা আজ মৃত্যু শয্যায়। পরিবার নিয়ে আমরা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর আতঙ্কে আছি।

নিহতের ছেলে মাহিম হোসেন লিমন বলেন, তার বাবা হত্যার প্রায় ৭ মাস চলে যাচ্ছে। অথচ এজাহারভুক্ত আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাবা হত্যার হত্যাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে- এটা যখন দেখি তখন নিজেদেরকেই অপরাধী মনে হয়। আর পুলিশ নাকি সব হত্যাকারীদের খুঁজে পাচ্ছে না। বলছে তারা ব্যর্থ। এই অবস্থায় পরিবারের আমরা সবাই অসহায় হয়ে পড়েছি। বর্তমানে অনলাইন ও তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসেও এ ঘটনায় হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে এতো গড়িমসি কেন সেই বিষয়টি অনেকটাই অবাক করার মতো!

এ সময় তিনি প্রকৃত হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি জানান।

এদিকে একই দাবিতে নিহতের পরিবারের সদস্যরা এবং গ্রামের সাধারণ মানুষ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- নিহতের অপর ছেলে মাইনুল হোসেন লিপন, মেহেদী হাসান লিখন, মাহমুদুল হাসান সুমন, ৭নং শলুয়া ইউনিয়নের সদস্য মো. সাবদুল, কৃষক আব্দুল বারী, চারঘাট উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম, চারঘাট বিএম কলেজের প্রভাষক আশিক এলাহি বুলবুল, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ইউনিটের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শেখ মো. মখলেসুর রহমান।

আপনার মতামত লিখুন :