নানা গৌরবোজ্জ্বল অতীত নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ বছরে পদার্পণ

বাংলার সকাল ডেস্কবাংলার সকাল ডেস্ক
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৬:৫১ PM, ০৬ জুলাই ২০২২

ষ্টাফ রিপোর্টার: নানা গৌরবোজ্জ্বল অতীত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৭০ বছরে পদার্পণ করেছে বুধবার। দীর্ঘ ৬৯ বছরের পথ চলায় নিজস্ব আলোয় আলোকিত এ বিদ্যাপীঠ। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গৌরব ও ঐতিহ্য বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই মাত্র ১৬১ জনশিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পরিসর। ১৯৫৩সালে রোপণ করা বীজটি বতর্মানে বিশাল মহিরুহে পরিণত হয়েছে। শহীদ ড. শামসুজ্জোহার স্মৃতি বিজড়িত দেশের শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠের রয়েছে গৌরব-ঐতিহ্যের সুদীর্ঘইতিহাস।
১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আইন পাসহয়। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীকে সঙ্গে নিয়ে মাদার বখ্শ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। এর পর শুরু হয় রাবির পথচলা।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় শহীদসৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনভবন চত্বরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সাথে সাথে জাতীয়পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা এবং প্রত্যেকটি হলের পতাকা উত্তোলন করা হয়।পরে সাদা পায়রা ও বর্ণিল বেলুন-ফেস্টুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানসৃজন ও সঞ্চালনের জায়গা। সময়ের সাথে এই জ্ঞানের পরিবর্তন হয়ে থাকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েশিক্ষা ও গবেষণা গুণগত মান সমৃদ্ধর জন্য বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ৫০ বছরের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি এ বিশ্ববিদ্যালয়ও একদিনবিশ্বমানের জ্ঞানচর্চার তীর্থস্থানে পরিণত হবে।
উপাচার্য আরো উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব উচ্চশিক্ষা তথা সামগ্রিকভাবে শিক্ষার উন্নয়ন বরাদ্দে উদার ভূমিকা রাখছেন। এই সুযোগ গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবকাঠামোগত তথা সুযোগ সুবিধার দিকে থেকে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতবিদ্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে সরকারের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিনবেলা ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়েরগণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সুব্রত কুমার মজুমদার এবং বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্তঅধ্যাপক কবি চৌধুরী জুলফিকার মতিন বক্তব্য প্রদান করেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপকসুলতান-উল-ইসলামের সভাপতিত্ব করেন আলোচনা সভার। প্রতি বছর দিবসটি বর্ণিলভাবে পালন করা হলেও এবছর অন্য আঙ্গিকে পালন করা হচ্ছে।
সিলেটসহ দেশের অন্যজেলায় বন্যার্তদের কষ্টের কথা বিবেচনায় এবার জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। তিনি জানান, সারা দেশব্যাপী কোভিডের-১৯ তিব্রতা বেড়ে চলেছে। এছাড়াও সাময়িকভাবে হলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। তাই বর্ণিলসাজসজ্জা ও অন্যান্য আয়োজন বাতিল করা হয়েছে। এখান থেকে যে অর্থ বাঁচবে সেটা বন্যার্তদের সাহায্য করা হবে।এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপাচার্য শিক্ষকদের জন্য নতুন একটি মিনিবাস ও শিক্ষার্থীদেরজন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করেন। ৭০-এর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি)।
বর্তমানে ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টরের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১১৭৭ জন শিক্ষক ও ২০০০ জনপ্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৩৩০জন (বিদেশি শিক্ষার্থী ৫৮ জন)। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন।বর্তমানে ১২ অনুষদের অধীনে বিভাগ রয়েছে ৫৯টি। বেড়েছে অবকাঠামো। ১২টি একাডেমিকভবনসহ বর্তমানে রাবির ছাত্রদের থাকার জন্য আবাসিক হল রয়েছে মোট ১১টি ও ছাত্রীদের জন্যরয়েছে ৬টি। এছাড়া গবেষক ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক ডরমেটরি।

 

 

আপনার মতামত লিখুন :