৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিল পদ্মার বুকে একটি সেতু। যে সেতুটি একটি সুতোয় মালা গেঁথে দেবে বাংলাদেশের উত্তর-দক্ষিণ আর পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলকে। সেতুটি সব ক্ষেত্রেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বাংলাদেশের জীবন ও অর্থনীতিতে। সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষদের আশা, শুধু জীবন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, দেশের নাটক ও চলচ্চিত্রের দৃশ্যপটে বৈচিত্র্যের স্বাদ এনে দেবে এই সেতু। বাড়বে কনসার্ট।
পদ্মা সেতু নিয়ে এমনই স্বপ্ন বুনছেন খুলনার ছেলে নির্মাতা-সংগীতশিল্পী মাসুদ হাসান উজ্জ্বল-
নিজেকে মাঝে মাঝে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ মনে হয়। রাষ্ট্র ও সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেওয়াই যেন আমার কাজ! সাধারণত যে বিষয়ে সবাই মিলে একসাথে কথা বলে, আমি সে প্রসঙ্গ এড়িয়েই চলি।
মনে হয় সব কথা সবাই বলে ফেলেছে, আমি আর কিই বা বলবো!
কিন্তু পদ্মা সেতু নিয়ে দুলাইন না লিখলে রীতিমতো বেঈমানি হয়ে যায়। কেবল সমালোচনা করবো, প্রশংসা করবার মতো ঘটনা ঘটলে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকবো, অতোটা একপেশে মানুষ আমি নই। যেহেতু আমার দাদাবাড়ি গোপালগঞ্জ, জন্ম ও বেড়ে ওঠা খুলনাতে, আমি জানি এই সেতু আমাদের জন্য কী! এবং এই সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ সংক্রান্ত যা কিছু জানতে পেরেছি, তাতে মনে হয়েছে একটা মানুষ (শেখ হাসিনা) কতখানি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলে এমন একটা অসম্ভবকে সম্ভব করে ছাড়তে পারেন! কেবল এই সাহস এবং দৃঢ়তার জন্য সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীকে আমি সেলাম আর কৃতজ্ঞতা জানাই। তার আশেপাশে দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ এবং চাটুকারের ছড়াছড়ি, এ কারণেই তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতেও অস্বস্তি হয়।
ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় পদ্মা সেতু নিয়ে কোনও গান আমি বাঁধতে পারিনিই! কোনও গান না বেঁধে এবং আবেগে কেঁদে না ফেলে বলতে চাই, আমি হৃদয়ের গভীর থেকে আবেগ বোধ করছি- একটা প্রায় অসম্ভব ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধান দিয়ে এমন একটা সেতু নির্মাণ করে দেখানো যেন-তেন কথা নয়।
যাই হোক, একটা কুমিরের খামারের মাঝখানে মাংস হাতে বসে থাকলে যে দশা হয় আমাদের প্রধানমন্ত্রীও এমন পরিস্থিতিতেই থাকেন বলে আমার মনে হয়। এতো রকমের প্রতিবন্ধকতা পাশ কাটিয়ে সফলভাবে এই সেতু নির্মাণ এবং উদ্বোধন করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাই।